প্রকাশিত: Sat, Dec 2, 2023 6:01 PM
আপডেট: Sat, Dec 6, 2025 7:54 PM

[১]৯ বছর ধরে ১২৭টি গ্রুপের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ লাখ ট্রেন যাত্রীদের ফ্রি সেবা দিচ্ছে রায়পুরার সাজ্জাদ হোসেন

এম.আজিজুল ইসলাম, রায়পুরা (নরসিংদী): [২] নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মো: সাজ্জাদ হোসেন। গ্রামের বাড়ি রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের মোহনীপুরে। প্রতিদিন ১২৭টি ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে প্রায় ৩৫ লাখ ট্রেন যাত্রীদের ফ্রি সেবা দেওয়াই তার নেশা। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রেনের আপডেট দিয়ে এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তার মুখস্থ রয়েছে দেশের সব ট্রেনের নাম, রুট ও আসা যাওয়ার সময়। [৩] ২০১৪ সাল থেকে এই ফ্রি সেবার মাধ্যমে ট্রেন যাত্রীদের মনে ভালোবাসার স্থান দখল করে নিয়েছেন তিনি। সাজ্জাদ হোসেন ছাড়াও ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় ফ্রি সেবা দিয়ে যাচ্চেন আরো অনেকে। কিন্তু তাদের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ট্রেন যাত্রীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এই সাজ্জাত হোসেন। তিনি এক হাতে মোবাইলে ক্লিক করে ট্রেনের আপডেট দিচ্ছেন আরেক হাতে খাবারও খাচ্ছেন। ট্রেন যাত্রীদের সেবা দিতে গিয়ে কখনো বিরক্তির ছাপ তার মধ্যে লক্ষ করা যায়নি।

[৪] জানা গেছে, স্টেশন মাস্টারের কাছে যাত্রীরা ট্রেনের আপডেট একবারের বেশি জানতে চাইলে বিরক্তিকর মনে করে কিন্তু সাজ্জাদ হোসেন তার ব্যতিক্রমী। ট্রেন যাত্রীরা বাসা, অফিস ও অন্যান্য স্থান থেকে বের হওয়ার আগেই ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে ট্রেনের অবস্থান জানতে পারছে। তার এই ফ্রি সেবামূলক কাজের অনুপ্রেরণায় আরো অনেকেই এগিয়ে এসেছে। তারাও ফ্রি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন দিনের পর দিন। আর এভাবেই লাখ লাখ মানুষ ফ্রি সেবা পাচ্ছেন। সহজ হচ্ছে ট্রেন যাত্রীদের যাতায়াত। 

[৫] মুঠোফোনে সাজ্জাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের নতুন সময়ের প্রতিবেদককে  বলেন, আমি ২০০৮ সাল থেকেই ট্রেনে আসা যাওয়া করি। সেই সময়ে রেলস্টেশনে এসে ঘন্টার পর ঘণ্টা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। কারণ অনেক সময় দেখা গেছে সঠিক সময়ে স্টেশনে ট্রেন পৌঁছাত না। আর এই ধারণা থেকে রেলস্টেশনে বিলম্বে পৌঁছার কারণে ট্রেন অনেক সময় পেতাম না। এভাবেই চলতে থাকে বছরের পর বছর। ২০১৪ সালে এসে আমরা কয়েকজন মিলে ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ চালু করি। পরে আমাদের ট্রেন চলাচলে বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ কমতে থাকে। ঘরে, অফিসে ও রাস্তায় থেকেই ট্রেনের খবর জানাতে পারছি। এখন ১২৭টি মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে আমি প্রায় ৩৫ লাখ ট্রেন যাত্রীদের মাঝে একদম ফ্রি সেবা পৌঁছে দিচ্ছি। এতে আমি লাখ লাখ মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি।

 [৬] যাত্রীরা জানান, আমাদের এখন আর রেলস্টেশন মাস্টারের কাছে গিয়ে ট্রেন আসা যাওয়ার খবর জানতে হয় না। আমরা নিজেরাই ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপ গুলোর মাধ্যমে ট্রেন আসা যাওয়ার খবর জানতে পারি। সবাই কম বেশি ট্রেনের খবর দিয়ে থাকে কিন্তু সাজ্জাদ হোসেন সবার চেয়ে বেশি ট্রেন আসা যাওয়ার খবর পৌঁছে দেন আমাদের।